সহবাসের কত দিন পর বাচ্চা পেটে আসে না?
গর্ভধারণের প্রক্রিয়া সঠিকভাবে বোঝার জন্য এটি জানা গুরুত্বপূর্ণ যে, সহবাসের পর গর্ভধারণ না হওয়ার সম্ভাবনা নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর, যেমন মহিলার ডিম্বস্ফোটন (ovulation), শুক্রাণুর জীবিত থাকার সময়কাল, এবং গর্ভধারণের জন্য অন্যান্য শারীরিক শর্তাবলী।
তবে, গর্ভধারণ না হওয়ার সাধারণ সময়কাল সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া হলো:
গর্ভধারণের প্রক্রিয়া:
ডিম্বস্ফোটন (Ovulation):
- একটি মহিলার ডিম্বাশয় (ovary) থেকে একটি ডিম্বাণু মুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ডিম্বস্ফোটন বলা হয়।
- ডিম্বস্ফোটন সাধারণত মাসিক চক্রের ১৪তম দিনে ঘটে (যদি আপনার চক্র ২৮ দিনের হয়)।
- ডিম্বস্ফোটনের পর ডিম্বাণু ১২-২৪ ঘণ্টা জীবিত থাকে এবং এই সময়ের মধ্যে যদি শুক্রাণু উপস্থিত থাকে, তবে গর্ভধারণ হতে পারে।
শুক্রাণুর জীবিত থাকা:
- শুক্রাণু সাধারণত মহিলার শরীরে ৩-৫ দিন পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে।
- সহবাসের ৩-৫ দিন পরে, শুক্রাণু যদি ডিম্বাণুর সাথে মিলিত না হয়, তবে গর্ভধারণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
গর্ভধারণ না হওয়ার সময়কাল:
- সহবাসের ২৪ ঘণ্টা পর:গর্ভধারণ সম্ভব নয় যদি ডিম্বস্ফোটন না ঘটে এবং শুক্রাণু ডিম্বাণুর সাথে মিলিত না হয়। সহবাসের পর প্রথম ২৪ ঘণ্টায় গর্ভধারণের সম্ভাবনা বেশি, তবে ডিম্বস্ফোটনের জন্য নির্দিষ্ট সময় থাকতে হবে।
- সহবাসের ৭২ ঘণ্টা (৩ দিন) পর:গর্ভধারণের সম্ভাবনা তখন কমে যায়, তবে যদি ডিম্বস্ফোটন ঘটে থাকে এবং শুক্রাণু এখনও জীবিত থাকে, তখনও গর্ভধারণ হতে পারে।
- সহবাসের ৫-৭ দিন পর:যদি শুক্রাণু ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলিত না হয় বা ডিম্বস্ফোটন না ঘটে, তবে গর্ভধারণের সম্ভাবনা আর থাকে না।এই সময়ের মধ্যে যদি গর্ভধারণ না ঘটে, তবে পরবর্তী মাসিকের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুতি এবং সতর্কতা:
- গর্ভধারণ না হওয়ার জন্য যদি আপনি সুরক্ষিত সহবাস চান, তবে জন্মনিরোধক পদ্ধতি ব্যবহার করুন (যেমন কনডম, পিল, বা অন্য কোনো নিয়মিত জন্মনিরোধক পদ্ধতি)।
- যদি গর্ভধারণের পরিকল্পনা না থাকে এবং সহবাসের পরে গর্ভধারণের চিন্তা থাকে, তবে ইমারজেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ পিল (পরিকল্পিত পিল) ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নেওয়া যেতে পারে, তবে এটি কোনও দীর্ঘমেয়াদী সমাধান নয়।
উপসংহার:
- সহবাসের ৫-৭ দিন পর, যদি ডিম্বস্ফোটন না ঘটে বা শুক্রাণু ডিম্বাণুর সাথে মিলিত না হয়, তবে গর্ভধারণ হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।
- তবে, যদি মাসিকের দেরি হয়, প্রেগন্যান্সি টেস্ট করা উচিত এবং নিশ্চিত হতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।